১৯১৩ সালে ব্রিটিশ সরকার শিক্ষা র ক্ষেত্রে কিছু রিজোলিউশন গ্রহণ করে। নিরক্ষরতা দূরীকরণ ,স্কুল শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং প্রতিটি প্রভিন্সে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয় । কিন্তু আবশ্যিক শিক্ষা বা কমপালসারি এডুকেশনের দায়িত্ব গ্রহন করতে সরকার অস্বীকার করে। দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে শিক্ষা বিতরণের জন্য প্রভিন্সগুলিকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। বেসরকারী স্কুল স্থাপনার উপর উৎসাহ দেওয়া হয়।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু আভ্যন্তরীণ সমস্যা নিবারণের উদ্দেশ্যে স্যাডলার কমিশন (১৯১৭ – ১৯১৯) গঠিত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এই কমিশনের প্রস্তাব গুলি দেশের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরে প্রযোজ্য হয়। এই প্রস্তাব গুলির মধ্যে ছিল ১২ বছরের স্কুল শিক্ষা এবং তারপর ৩ বছরের ডিগ্রি। এছাড়াও শিক্ষক দের ট্রেনিং এবং নারী শিক্ষার গুরুত্বের কথাও বলা হয়েছিল। এই কমিশনের প্রস্তাব অনুসারে দেশে ৭ টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। মন্টেগ-চেমর্সফর্ড রিফর্মস্ ১৯১৯ এর পর শিক্ষা দপ্তরের দায়িত্ব প্রভিন্সের হাতে চলে যায়।
এদিকে বহু সংখ্যক সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা শিক্ষার মানকে কলুষিত করছে কিনা তা বিবেচনার জন্য ১৯২৯ সালে হার্টগ কমিটি নিযুক্ত হয়। এই কমিটি প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ভর্তির ব্যাপারে “সিলেক্টিভ সিস্টেম” এর উপর জোর দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। ছাত্র ছাত্রীরা যাতে শিল্প এবং বাণিজ্যিক পেশায় সফল হতে পারে সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলিকে প্রয়োজনীয় কোর্স-কারিকুলাম চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
১৯৩৭ সালে কংগ্রেস প্রভিন্সিয়াল মিনিস্ট্রি ন্যাশনাল স্কিম ফর এডুকেশন এর উপস্থাপনা করে, যা ওয়ার্ধা স্কিম নামেই বেশী পরিচিত। মহাত্মা গান্ধীর মতে এটি ছিল কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা প্রাপ্তি বা লার্নিং থ্রু অ্যাক্টিভিটি। জাকির হুসেন কমিটি এই ওয়ার্ধা স্কিম প্রস্তুত করে।
তৎকালীন ভারত সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা জন সারজেন্ট শিক্ষা সম্পর্কিত এক নতুন পরিকল্পনা গ্রহন করেন যা সারজেন্ট প্ল্যান (১৯৪৪) নামে পরিচিত । এই প্ল্যানে ৬ থেকে ১১ বছর বয়সের সমস্ত ছেলেমেয়েদের জন্য একটি “ইউনিভার্সাল , ফ্রি ও কমপালসারি এডুকেশন ” সিস্টেম ও তারপর ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের জন্য ছয় বছরের একটি স্কুল কোর্সের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
স্বাধীনতার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্বিবেচনা র উদ্দেশ্যে রাধাকৃষ্ণন কমিশন (১৯৪৮) গঠিত হয়। এই কমিশনের প্রস্তাবে ইউ জি সি গঠন করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে পরীক্ষা নেওয়ার এক সমান মানদণ্ড গ্রহণ করা হয়।